বাণিজ্যিক গাড়ি লোন বাংলাদেশ | Commercial Vehicle Loan Bangladesh
বাংলাদেশে পরিবহন খাত দ্রুত প্রসারিত হওয়ায় বাণিজ্যিক গাড়ির চাহিদা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছোট ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ড ভ্যান, ডাম্প ট্রাক কিংবা যাত্রীবাহী গাড়ি—ব্যবসা বাড়াতে এখন অনেকেই bank ও NBFC (Non-Bank Financial Institution) থেকে বাণিজ্যিক Car Loans নিয়ে থাকেন। আজকের এই পোস্টে আমরা আলোচনা করব, বাংলাদেশে কীভাবে বাণিজ্যিক Car loans পাওয়া যায়, এর শর্ত, সুবিধা, EMI, সুদের হার এবং আবেদন প্রক্রিয়া।
বাণিজ্যিক Car Loan কী?
বাণিজ্যিক car Loan হলো একটি আর্থিক সুবিধা, যেখানে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান আপনাকে ব্যবসার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত যানবাহন কিনতে ঋণ প্রদান করে। যেমনঃ
- পিকআপ
- ট্রাক
- কাভার্ড ভ্যান
- বাস
- ডাম্প ট্রাক
- প্রাইম মুভার
- অ্যাম্বুলেন্স বা বিশেষায়িত যানবাহন
বাংলাদেশে কোন কোন প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক গাড়ি Loans দেয়?
বাংলাদেশে বর্তমানে নিম্নোক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো এই লোন প্রদান করে থাকে— Bank ওয়েবসাইটে গাড়ির লোনের বিস্তারিত পাবেন
ব্যাংকসমূহ
- ব্র্যাক ব্যাংক (JAC পিকআপে বেশি লোন দেয়)
- ডাচ বাংলা ব্যাংক
- ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ
- প্রাইম ব্যাংক
- ইস্টার্ন ব্যাংক
- সিটি ব্যাংক
- পুবালী ব্যাংক (JAC পিকআপে বেশি লোন দেয় যা গাড়ির দামের প্রায় ৬৫% পর্যন্ত)
City bank car loan EMI calculator
এনবিএফসি / Leasing কোম্পানি
- IPDC Finance
- LankaBangla Finance
- United Finance (JAC পিকআপে বেশি লোন দেয়)
- IDLC Finance
- Uttara Finance
এরা ব্যক্তিগত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও SME মালিকদের জন্য সহজ শর্তে লোন দিয়ে থাকে।
বাণিজ্যিক Vehicle Loans সুবিধা
- কম ডাউন পেমেন্ট: সাধারণত ২০%–৩০% পর্যন্ত দিতে হয়।
- দীর্ঘমেয়াদি কিস্তি সুবিধা: ৩ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত।
- যানবাহন ব্যবসায় ব্যবহারযোগ্য: পণ্য পরিবহন, রাইডশেয়ারিং, ডেলিভারি সার্ভিস, কুরিয়ার , পলট্রি , মাছ ব্যবসায় ইত্যাদি।
- Vehicle Insurance ও রেজিস্ট্রেশন সুবিধা: অনেক প্রতিষ্ঠান লোনের সাথে vehicle Insurance সুবিধা যুক্ত করে দেয়।
- SME ব্যবসার জন্য অতিরিক্ত সাপোর্ট: ডকুমেন্টেশন সহজ এবং দ্রুত প্রসেস , easy EMI facility.
Vehicle Loans পাওয়ার যোগ্যতা
- বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে
- ব্যবসা পরিচালনা বা চাকরি থেকে স্থায়ী আয় থাকতে হবে
- ন্যূনতম ১ বছরের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট ৬–১২ মাস
- টিআইএন সার্টিফিকেট (কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োজন)
- ট্রেড লাইসেন্স (SME বা ব্যবসায়িক লোনের ক্ষেত্রে)
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- এনআইডি
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি
- ইলেকট্রিসিটি বিল/বাসা ভাড়ার রসিদ
- ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- টিআইএন সার্টিফিকেট
- গাড়ির প্রফর্মা ইনভয়েস
সুদের হার (Interest Rate)
বাংলাদেশে বাণিজ্যিক গাড়ি লোনের সুদের হার সাধারণত—
- ১২% থেকে ১৪% (প্রতিষ্ঠানভেদে ভিন্ন হতে পারে)
- ইসলামিক ব্যাংকিংয়ে হালাল মোড (মুরাবাহা/হিজরাহ) সিস্টেমে ভিন্ন রেট থাকে
কীভাবে Commercial Vehicle Loan আবেদন করবেন?
- আপনার পছন্দের ব্যাংক/ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানের শাখায় যোগাযোগ করুন
- বেছে নেয়া গাড়ির ব্রান্ড নাম ও মডেল সংগ্রহ করুন
- প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিন
- পছন্দের গাড়ির বিক্রয় প্রতিনিধির থেকে কোটেশন সংগ্রহ করে ব্যাংক বরাবর জমা দিন
- ব্যাংকের ভেরিফিকেশন টিম তথ্য যাচাই করবে
- অনুমোদন পেলে গাড়ির পেমেন্ট ব্যাংক সরাসরি কোম্পানিকে পাঠাবে যা পার্চেজ অর্ডার নামে পরিচিত। (ব্যাংক কোম্পানির নামে পেএবল চেক ইস্যু করবে)
- ব্যাংক এর নামে ইন্সরেন্স করতে হবে। (মালিক/প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক এই দুই পার্টির যৌথ নামে রেজিস্ট্রেশন হবে।
গাড়ির জন্য ডাউন পেমেন্ট কত লাগে?
সাধারণত—
- নতুন গাড়ি: ২০%–৩০%
- রিকন্ডিশন্ড গাড়ি: ৩০%–40%
বাণিজ্যিক গাড়ি লোন নেওয়ার আগে যা খেয়াল রাখবেন
- মাসিক কিস্তি (EMI) আপনার আয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা
- গাড়ির ইনস্যুরেন্স বাধ্যতামূলক কিনা
- লুকানো চার্জ বা প্রসেসিং ফি আছে কিনা
- কিস্তির তারিখ ও জরিমানা নীতি
- রেজিস্ট্রেশন খরচ কে বহন করবে
উপসংহার
বাংলাদেশে ব্যবসা সম্প্রসারণ বা নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে Commercial Vehicle Loan একটি বড় সুযোগ। সঠিক পরিকল্পনা ও উপযুক্ত ব্যাংক/ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করলে খুব সহজেই পিকআপ, ট্রাক বা যেকোনো বাণিজ্যিক যানবাহন কেনা সম্ভব। ব্যবসার আয় বাড়াতে এবং দ্রুত ডেলিভারি সেবা নিশ্চিত করতে এই Loans আপনার সেরা সহায়ক হতে পারে।
